অপেশাদার লাইসেন্স দিয়ে কি চাকরি করা যাবে?
আজকের এই লেখায় আমরা জানবো অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে চাকরি করা সম্ভব কিনা এবং এই লাইসেন্সের সুযোগ-সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা। ড্রাইভিং লাইসেন্সের ধরন, ব্যবহারের ক্ষেত্র এবং যোগ্যতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স কি?
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স একটি সরকারি স্বীকৃত লাইসেন্স, যা একজন ব্যক্তিকে হালকাযান বা মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি দেয়। এটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য প্রযোজ্য। অপেশাদার লাইসেন্সধারী ব্যক্তি কোনো বেতনভোগী কর্মচারী হিসেবে গাড়ি চালাতে পারবেন না। অর্থাৎ, এটি দিয়ে যাত্রী পরিবহন, মালামাল পরিবহন, বা কোনো পেশাদার ড্রাইভিং কাজ করা যায় না।
অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য যোগ্যতা
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়। আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণী পাস হতে হবে। বয়স হতে হবে ন্যূনতম আঠারো বছর। প্রার্থীকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। এই যোগ্যতা পূরণ করা সবার জন্য সহজ এবং এটি ব্যক্তিগত ড্রাইভিং-এর জন্য আদর্শ একটি লাইসেন্স।
অপেশাদার লাইসেন্সের সুবিধা
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ দশ বছর। এটি পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের তুলনায় দ্বিগুণ সময় কার্যকর থাকে। এই লাইসেন্স পেতে বা নবায়নের জন্য কোনো মেডিকেল টেস্টের প্রয়োজন হয় না। এটি সময় এবং খরচ সাশ্রয় করে। অপেশাদার লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য কোনো দক্ষতা যাচাই পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র নবায়ন ফি জমা দিলেই মেয়াদ বৃদ্ধি করা যায়। এই সুবিধাগুলো অপেশাদার লাইসেন্সকে ব্যক্তিগত ড্রাইভিংয়ের জন্য উপযুক্ত এবং সহজলভ্য করে তোলে।
অপেশাদার লাইসেন্সের সীমাবদ্ধতা
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে কোনো ধরনের পেশাদার চাকরি করা যায় না। এটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য প্রযোজ্য। অপেশাদার লাইসেন্স দিয়ে হালকাযান বা মোটরসাইকেল চালানো যায়, কিন্তু ভারী যানবাহন বা গণপরিবহন চালানোর অনুমতি নেই। এই লাইসেন্সধারী কোনো বেতনভোগী কর্মচারী হিসেবে গাড়ি চালাতে পারবেন না। এ কারণে, যদি আপনার লক্ষ্য পেশাদার ড্রাইভার হিসেবে কাজ করা হয়, তাহলে অবশ্যই পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে।
রাইড শেয়ারিং কি সম্ভব?
বর্তমান সময়ে রাইড শেয়ারিং একটি জনপ্রিয় কাজ। পাঠাও, উবার, বা অন্য কোনো রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মে নিজের গাড়ি বা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে আয় করা যায়। অপেশাদার লাইসেন্স দিয়ে রাইড শেয়ারিং করা সম্ভব, তবে এটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট শর্তে সীমাবদ্ধ। বিআরটিএ-এর শর্ত অনুযায়ী, আপনি ব্যক্তিগত গাড়ি বা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে সীমিত আয় করতে পারবেন। তবে পেশাদার পরিবহন বা বড় পরিসরে কাজের জন্য পেশাদার লাইসেন্স নিতে হবে।
পেশাদার লাইসেন্স কেন দরকার?
পেশাদার লাইসেন্স দিয়ে আপনি যেকোনো পেশাদার ড্রাইভিং চাকরি করতে পারবেন। এটি ভারী যানবাহন চালানোর অনুমতি দেয় এবং দেশ ও বিদেশে পেশাদার কাজের সুযোগ তৈরি করে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে আপনাকে কিছু অতিরিক্ত শর্ত পূরণ করতে হয়, যেমন: বয়স ন্যূনতম একুশ বছর। মেডিকেল টেস্ট এবং দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। পেশাদার লাইসেন্সের মেয়াদ পাঁচ বছর। নবায়নের জন্য পুনরায় দক্ষতা যাচাই পরীক্ষা দিতে হয়।
অপেশাদার লাইসেন্স দিয়ে চাকরি করা যাবে?
সরাসরি উত্তর হলো, না। অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে চাকরি করা সম্ভব নয়। এটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত গাড়ি বা মোটরসাইকেল চালানোর জন্য প্রযোজ্য। যদি আপনি ড্রাইভিং পেশায় যুক্ত হতে চান, তাহলে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পেশাদার লাইসেন্স ছাড়া আপনি ভারী যানবাহন চালানো বা ড্রাইভিং চাকরির জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন না।
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স মূলত ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এবং হালকাযান চালানোর জন্য সুবিধাজনক। এটি সহজে পেতে এবং নবায়ন করতে পারেন, তবে চাকরি বা পেশাদার কাজের জন্য এটি অপ্রতুল। তাই আপনার যদি লক্ষ্য হয় পেশাদার ড্রাইভার হওয়া, তাহলে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করাই বুদ্ধিমানের কাজ।